ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শহীদ শরিফ ওসমান হাদির জানাজা উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ২০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিজিবি সদর দফতর থেকে এ সংক্রান্ত ক্ষুদেবার্তা জারি করা হয়।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, ওসমান হাদির জানাজাকে কেন্দ্র করে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জাতীয় সংসদ ভবন ও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বডি ওর্ন ক্যামেরা ও রায়োট কন্ট্রোল গিয়ারসহ ২০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
জানাজায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরাসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ।
উল্লেখ্য, শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে শরিফ ওসমান হাদির ময়নাতদন্ত শেষ হয়। পরে তার মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
এর আগে, আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তার মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। এ সময় হাদির স্বজন, সহযোদ্ধা ও সহকর্মীরা সঙ্গে ছিলেন।
জানা গেছে, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে হাদিকে শেষ গোসল করানো হবে। বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার মরদেহ নেওয়া হবে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায়। সেখানে দুপুর দুইটায় হাদির নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
জানাজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, শহীদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণে আগ্রহীদের কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারি বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এসময় সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে, শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে আজ একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে। দিনটি উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকছে।
শরিফ ওসমান হাদি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের একজন সম্মুখ সারির নেতা ছিলেন। তিনি ইনকিলাব মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।
গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণাকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
এরপর পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সবশেষ গত ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় ওসমান হাদিকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। পরে শুক্রবার তার মরদেহ ঢাকায় আনা হয়।












